অনলাইন ডেস্ক :
বাগানের এক কোণে একটি দৃষ্টিনন্দন কুটিরের নিচে বসে সেলিনা বেগম পড়ছেন ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’। সেখানে আছে বিশুদ্ধ খাবার পানির ডিস্পেন্সার ও ওয়ান টাইম গ্লাস। নেই খড়তাপ বা বৃষ্টির ঝাপটা। অদূরে অফিস দেয়ালের বাহিরে দেখা যাচ্ছে একটি ডিজিটাল সিরিয়াল বোর্ড। সেলিনা মাঝেমধ্যে তাকাচ্ছেন সেদিকে। এরকম চিত্রই দেখা গেলো গাংনী সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় প্রাঙ্গণে।
মুজিববর্ষকে বর্ণিল ও অর্থবহ করে তুলতে এক অনন্য উদ্যোগ নিয়েছেন গাংনীর সাব-রেজিস্ট্রার। আবাল বৃদ্ধ বণিতা সেবাপ্রার্থীরা এখানে অপেক্ষা করার জন্য বসার জায়গা পাবেন। এখন আর বাইরে দাঁড়িয়ে, এলোমেলো ঘুরোঘুরি করে অপেক্ষমাণ সময়ে বেকায়দায় পড়তে হবে না। দলিল দাখিল করা মাত্রই একটি সিরিয়াল বা ক্রমিক নম্বর পড়বে এবং অপেক্ষমাণ তালিকা তৈরি হবে। প্রত্যকেই তার ক্রম জেনে মুজিব কুটিরে বসে ডিজিটাল ডিসপ্লেতে ক্রম নম্বর দেখতে পারবেন এবং সময় কাটাতে পারবেন।
কুটিরটি কেন ‘মুজিব কুটির’ নামকরণ করা হলো, এই প্রশ্নের জবাবে সাব-রেজিস্ট্রার জনাব মাহফুজ রানা বলেন, “আমার বাবা একজন বঙ্গবন্ধু ভক্ত মানুষ। বঙ্গবন্ধুকে যত জেনেছি, পড়েছি; ততই ভালোবেসেছি, শ্রদ্ধায় ততই মাথা অবনত হয়েছে তার প্রতি। তার ত্যাগ ও সংগ্রামে আজ আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক, প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা। তিনি নেই, কিন্তু তার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ সূচক কিছু একটা করার ইচ্ছে ছিলো ছোটবেলা থেকেই।”
তিনি আরও বলেন যে, ১৯৭২ এর সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১(২) তে সরকারি কর্মচারীদের সকল সময়ে জনগণের সেবায় সচেষ্ট থাকার কথা বলা হয়েছে। সে পথেই হেটেছি; চেষ্টা করেছি জনসেবাকে বহুমাত্রিক রূপ দিতে। এই মুজিব কুটিরে যত সেবা প্রার্থী আসবে, প্রত্যেকেই বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করবে, একই সাথে ছায়া, আশ্রয়, বিশুদ্ধ পানি ও বসার সুন্দর জায়গা পাবে। কুটিরটি কার্যালয় প্রাঙ্গণের ফুলের বাগানের এক কোণে অবস্থিত হওয়ায় এটি দৃষ্টিনন্দন হবার পাশাপাশি আরামপ্রদ। ফুলবাগানটিও ধাপে ধাপে সাজিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
নবীন এই কর্মকর্তা যোগদানের পর কার্যালয় ভবনের বেহাল দশা সংস্কার, মহিলা কর্মচারীদের জন্য নামাজের ঘর, সুদৃশ্য নোটিশ বোর্ডে সিটিজেন চার্টার তৈরি, ডিজিটাল সিরিয়াল সিস্টেম চালু সহ নানাবিধ পদক্ষেপ ছিল চোখে পড়ার মত। মুজিব বর্ষে জনবান্ধব নিবন্ধনের যে স্লোগান রয়েছে তা বাস্তবায়নে তিনি মহাপরিদর্শক নিবন্ধন এর সার্বিক সহযোগিতা পেয়েছেন বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। মুজিব বর্ষের শেষাংশে এই কুটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে
তিনি বলেন, “এটি জাতির পিতাকে উৎসর্গ করা হলো এবং গাংনীবাসীকে উপহার দেয়া হলো। এটি সারাদেশের নিবন্ধন অফিস সমূহের জন্য একটি মডেল অফিস হিসেবে দাড় করানোর চেষ্টা করেছি। ”
সূত্র : নিউজজি২৪