মেঘনা নদীতে অবৈধ ড্রেজিংয়ে বালি উত্তোলনের অভিযোগ

মেঘনা নদীতে অবৈধ ড্রেজিংয়ে বালি উত্তোলনের অভিযোগ

সোহানুর রহমান সোহান | ভৈরব অনলাইন ডেস্ক |

কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনা নদীতে অবৈধ ড্রেজিংয়ে বালি উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী মহল এমন অভিযোগ উঠেছে। এতে ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটছে শামপুর গ্রামবাসী। বার বার বাধা দিলেও বন্ধ হচ্ছে না বালি উত্তোলন। প্রতিকার চেয়ে বালি উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছে শামপুর গ্রামবাসী। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন বলছে নদী থেকে বালি উত্তোলন অবৈধ। বালি উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শামপুর গ্রামবাসীরা জানায়, গত কয়েক দিন যাবত একটি প্রভাবশালী চক্র আগানগর ইউপি সদস্য রাশেদ মেম্বারের প্রত্যক্ষ মদদে শামপুর গ্রামের বেড়িবাধঁ সংলগ্ন স্থান থেকে ড্রেজারে বালি উত্তোলন করছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটানা ড্রেজারে বালি উত্তোলনের ফলে গ্রামটি যে কোন সময় মেঘনা নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। গ্রামটিতে ২ হাজার লোকের বসবাস। গ্রামটি বিলীন হয়ে গেলে ২ হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়বে। তাদের মাথা গোজাঁর ঠাই থাকবেনা। শুধু শামপুর গ্রামই নয় বালি উত্তোলনের ফলে আশপাশের ফসলি জমি ও গ্রাম নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে শামপুর গ্রামের মোঃ হোসেন মিয়া জানান, শামপুর গ্রামের বেড়িবাধঁ সংলগ্ন নদী থেকে ড্রেজারে বালি উত্তোলনের কারনে গ্রামটি যে কোন সময় মেঘনা নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে । আমরা বাধা দেওয়ার পরও তারা বালি উত্তোলন বন্ধ করছে না। এ বিষয়ে একই এলাকার মিজান মিয়া জানান, গ্রামটি মেঘনা নদী ঘেষা হওয়ায় আমরা ভাঙন আতঙ্কে থাকতাম সব সময়। কিন্ত বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির প্রচেষ্টায় ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য একটি বেড়িঁবাধ নির্মাণ করে দিয়েছে। এখন বালি উত্তোলনের বেড়িবাধ ভেঙে গ্রামটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেলে আমাদেরও মাথা গোজার ঠাঁই থাকবেনা । তাই স্থানীয় প্রশাসন ও সাংসদ নাজমুল হাসান পাপন যেন বালি উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেন। একই কথা জানালেন হোসেন মিয়া, অহিদ মিয়া, মোজাম্মেল, রুহুল আমিন শামিম’সহ এলাকাবাসীরা। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আগানগর ইউপি সদস্য রাশেদ মিয়া জানান, নদী খনন করার দরকার হলে খনন করতে হবেনা। ড্রেজারটি ভৈরব শহরের স্থানীয় এক নেতার। তবে আমি ড্রেজারের জায়গা দেখানোর জন্য একদিন সেখানে গিয়ে ছিলাম। ড্রেজারটি আমার না। এ বিষয়ে ভৈরব শহরের ঐ নেতা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বালি নিলামের প্রয়োজনীয় একটি ডকুমেন্ট না থাকায় ড্রেজিং করা হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ বলেন, নদী থেকে বালি উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ । শামপুর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে ড্রেজারে বালি উত্তোলন করছে এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে বালি উত্তোলন বন্ধে ড্রেজার মালিককে নিষেধ করা হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বালি মহাল করা হবে, এজন্য নদী সার্ভে, জরিপ’সহ প্রয়োজনীয় কাজ শেষে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে বৈধভাবে মেঘনা নদী থেকে বালি উত্তোলন করা গেলে সরকার ও রাজস্ব পাবে।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানান, কোথায় থেকে বালি উত্তোলন হচ্ছে? উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেন বালি উত্তোলনের বিষয়ে, এ বিষয়ে আমার কোন দায়িত্ব নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *