অনলাইন ডেস্ক :
কবীর বকুল ইস্যুতে ভেঙে গেল গীতিকবি সংঘ। রবিঠাকুরের ‘হঠাৎ দেখা’ কবিতা থেকে দুই লাইন নিয়ে কবির বকুলের গান ও সেই গানে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার পর সারাদেশে যখন সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে নিশ্চুপ ছিল গীতিকবি সংঘ। সংঘের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ থাকার পরও আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি না দেওয়ায় অনেকের মাঝে দেখা দেয় মতবিরোধ। এই মতবিরোধের জেরেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন সংগঠনের আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক প্রীতম আহমেদ এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সোমেশ্বর অলি। প্রীতম আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, ‘সংগঠন করলে অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকে।
অনেক বিষয়ে নিজের স্বাধীন মতামত প্রকাশ করা যায় না। আর তা ছাডা আমার প্রধান কাজ ছিল গীতিকবি ও সংগীত শিল্পীদের স্বার্থরক্ষার জন্য আমার অভিজ্ঞতা থেকে প্রয়োজনীয় আইনি সংশোধন ও সেসব বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সমাধানের পথগুলো বের করা। আমি তা করেছি। আমাকে তারা আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে সম্মানিত করেছেন। শুধু তা-ই নয়, গীতিকবি সংঘ, সুরকার ও গায়কদের সংগঠনের কমিটি প্রধানদের সাথেও একইভাবে দফায় দফায় মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করে গত প্রায় ২ বছর কাজ করেছি। এখন সব আয়োজন শেষে আইন পাস হওয়ার জন্য প্রস্তত। আমি মনে করেছি আমার দায়িত্বটুকু শেষ।’
যতটুকু জেনেছি আপনি কবীর বকুল ইস্যুতেই পদত্যাগ করেছেন। এ নিয়ে আপনার মন্তব্য কী? প্রীতম বলেন, ঠিক মতবিরোধ নয়। উনি সম্মানিত ও গুণী গীতিকবি। আমাদের সকলের অত্যন্ত প্রিয় মানুষ। ওনার লেখা নিয়ে যে বিতর্কটা উঠেছিল, উনি নিজেই তা সমাধান করার জন্য যথেষ্ট। তবে গীতিকবি সংঘ আরও ভালো ভূমিকা নিতে পারত। জাতীয় ইস্যুটি যখন দেশ ছাড়িয়ে দেশের বাইরে চলে গেল, তখনো এরা চুপচাপ। হয়তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গীতিকবি সংঘের সদস্য নন বলে এই সংগঠন কোনো বক্তব্য দেওয়া থেকে নীরব রয়েছে। এসব নীরবতা আমার ভালো লাগে না। যেহেতু আমি এই সংগঠনের সকল সদস্য কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত আইন সম্পাদক এবং আমার সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদককে নিয়েই এত বিতর্ক হচ্ছে এবং সংগঠন নিশ্চুপ তাই নীতিগতভাবে আমি বিব্রত হয়ে পদত্যাগ করেছি।’
অন্যদিকে সোমেশ্বর অলিকে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা, অপারগতা ও পেশাগত ব্যস্ততার কারণে আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’ আর কোনো বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি এই গীতিকবি। তবে গীতিকবি সংঘের একাধিক সদস্য জানান, কবীর বকুল ইস্যু নিয়ে সংঘের ভেতরে কয়েক দিন ধরেই চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের দুইজনের পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া হলো এই ক্ষোভের বিস্ফোরণ।
গীতিকবি সংঘের সভাপতি শহীদ মাহমুদ জঙ্গীর সাথে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
উল্লেখ্য, গীতিকবি সংঘ প্রতিষ্ঠার কিছুদিন পরই মতবিরোধের কারণে নির্বাহী সদস্য জাহিদ আকবর ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জয় শাহরিয়ার পদত্যাগ করেন। এক বছর যেতে না যেতেই এবার পদত্যাগ করলেন প্রীতম আহমেদ ও সোমেশ্বর অলি।
তথ্যসূত্র : আমাদের সময়।