কক্সবাজারের নিরাপত্তা ও মানবিকতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন এডিশনাল ডিআইজি আপেল মাহমুদ

কক্সবাজারের নিরাপত্তা ও মানবিকতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন এডিশনাল ডিআইজি আপেল মাহমুদ

অনলাইন ডেস্ক :

বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার প্রতিদিন হাজারো দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট ও বিনোদনকেন্দ্র। এত বিপুল পর্যটক সমাগমের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করাই এক বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জকে দৃঢ় নেতৃত্ব ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে মোকাবিলা করছেন কক্সবাজার রিজিয়নের ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ। জুলাই থেকে আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত বিভিন্ন উদ্যোগ কক্সবাজারকে করেছে আরও নিরাপদ ও পর্যটকবান্ধব।

পেশাদারিত্ব ও মানবিকতা সমানতালে

গত জুলাই মাসে কক্সবাজার পর্যটন পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভায় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পেশাগত দক্ষতা ও কাজের পরিবেশ উন্নয়ন আমাদের জন্য অপরিহার্য। পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও পেশাদার আচরণ বজায় রাখতে হবে।” সভায় দায়িত্ববোধ, সতর্কতা ও মানবিক আচরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। তাঁর এ বার্তা শুধু পুলিশ সদস্যদের জন্য অনুপ্রেরণাই নয়, বরং পর্যটন নগরীর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

উদ্ধার অভিযানে সরাসরি তত্ত্বাবধান

জুলাই মাসেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্র হিমছড়ি সমুদ্রে ডুবে গেলে আপেল মাহমুদ সরাসরি উদ্ধার অভিযানের তত্ত্বাবধান করেন। ফায়ার সার্ভিস, পর্যটন পুলিশ ও লাইফগার্ডদের সমন্বয়ে নিখোঁজদের খোঁজে পরিচালিত তৎপরতায় তাঁর উপস্থিতি কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করে। তিনি জানান, “উদ্ধার অভিযান চলাকালীন সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সমন্বয় বজায় রাখা হয়েছে। পর্যটক ও স্থানীয়দের নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার।” এ ঘটনাই প্রমাণ করে নেতৃত্ব শুধু নির্দেশনায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং প্রয়োজনে মাঠে নেমে কাজ করাই সত্যিকারের পেশাদারিত্ব।

তরুণদের জন্য ক্রীড়া ও সৃজনশীলতা

যুব সমাজকে মাদক ও সহিংসতা থেকে দূরে রাখতে খেলাধুলার প্রসারে বিশেষ উদ্যোগ নেন তিনি। জুলাই মাসে Beach Tchoukball প্রশিক্ষণের উদ্বোধনে তিনি বলেন, ক্রীড়া তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়ক এবং সঠিক পথে রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। একই মাসে কক্সবাজারে আয়োজিত ‘Creators of Cox’ মিটআপে অংশ নিয়ে তিনি স্থানীয় ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাতাদের উৎসাহিত করেন এবং তাঁদের ভবিষ্যৎ উদ্যোগে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ ধরনের পদক্ষেপ কক্সবাজারকে কেবল নিরাপদ নয়, সৃজনশীল ও প্রাণবন্ত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক।

অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান

১৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে তাঁর নেতৃত্বে পর্যটন পুলিশ শহরের বিভিন্ন স্পা সেন্টার ও হোটেলে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে অনুমোদনহীন কার্যক্রম ও অবৈধ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। সংবাদমাধ্যমে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান, “পর্যটন নগরীর ভাবমূর্তি রক্ষায় কোনো অবৈধ কার্যক্রমকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবসময় তৎপর থাকব।” এ উদ্যোগ স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের আস্থা আরও বৃদ্ধি করেছে।

পর্যটক ও স্থানীয়দের আস্থার প্রতীক

কক্সবাজারে ঘুরতে আসা এক পর্যটক বলেন, “তিনি থাকলে কক্সবাজারে আসা নিরাপদ মনে হয়। তাঁর উপস্থিতিই আস্থা জোগায়।” স্থানীয় প্রশাসনও মনে করে, নিরাপত্তা, উদ্ধার অভিযান ও সামাজিক উদ্যোগে তাঁর নেতৃত্ব কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরীতে পরিণত করছে।

পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, উদ্ধার অভিযানে সরাসরি অংশগ্রহণ, তরুণদের জন্য ইতিবাচক কর্মসূচি এবং অবৈধ কার্যক্রম দমনে আপসহীন অবস্থান—এসব কক্সবাজারকে দিয়েছে নতুন পরিচয়। অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ শুধু পুলিশের পেশাদার কর্মকর্তা নন, বরং তিনি মানবিক নেতৃত্ব ও অনুকরণীয় উদাহরণের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর নেতৃত্বেই কক্সবাজার ক্রমে হয়ে উঠছে নিরাপদ, সুসংগঠিত এবং বিশ্বমানের পর্যটন নগরী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *