
অনলাইন প্রতিবেদক, নাসিরনগর :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে ধানের শীষের প্রতীক পেয়েছেন দলের তৃণমূলের কান্ডারী, তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা জনাব এম এ হান্নান। তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারুণ্যের অহংকার জনাব তারেক রহমান।
মনোনয়ন ঘোষণার পর নাসিরনগর জুড়ে বইছে আনন্দের স্রোত। তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বলেন, দলের দুর্দিনে যিনি পাশে ছিলেন, তিনিই নেতৃত্বের যোগ্য— এম এ হান্নান ভাই সেই যোগ্য মানুষ।
ঐতিহ্যবাহী গোকর্ণ ইউনিয়নের নবাব স্যার শামসুল হুদা মোজাম্মেল হক কাপ্তান মিয়া, একেএম নিজামুর রহমান শাহজান মিয়া এবং আহসানুল হক মাস্টারদের মতো কৃতিত্বপূর্ণ স্বদেশভূমির সূর্যসেনাদের উত্তরসূরি এম এ হান্নান। তিনি ১৯৭৩ সালের ১লা জানুয়ারি নুরপুর (লাহাজুরা) গ্রামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি ভদ্র, নম্র, পরিশ্রমী ও সমাজসচেতন ছিলেন।
নুরপুর লাহাজুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে গোকর্ণ সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে তিতুমীর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও স্নাতক সম্পন্ন করেন।
রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয় তিতুমীর সরকারি কলেজ ছাত্রদল থেকে। ১৯৯৬ সালে তিনি ঢাকাস্থ নাসিরনগর ছাত্র কল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি প্রতিবাদী, সাহসী ও ন্যায়ের পক্ষে আপসহীন ছিলেন।
২০০১ সালে শিক্ষা জীবন শেষে তিনি গ্রামে ফিরে এসে জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন শুরু করেন। ২০০৩ সালে গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। একই সঙ্গে ২০০৩ সালে নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো একই পদে নির্বাচিত হন।
দলের সংকটে ও প্রতিকূল সময়ে এম এ হান্নান অক্লান্ত পরিশ্রমে সংগঠনকে সচল ও শক্তিশালী করেছেন। ২০১১ সালে দ্বিতীয়বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ইউনিয়নের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন এবং অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
বিগত ১৭ বছরে বিগত সরকারের আমলে তিনি নাসিরনগরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয় এবং তিনি ১৪ বার কারাভোগ করেন। তবুও তিনি রাজনীতি থেকে কখনো সরে যাননি, বরং রাজপথে ছিলেন নির্ভীকভাবে সক্রিয়।
২০২৩ সালের ১৪ জানুয়ারি ভোটের মাধ্যমে তিনি নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন, যেখানে তিনি সৈয়দ একরামুজ্জামান সুখনকে পরাজিত করেন। ২০২৫ সালে জিয়া সাংস্কৃতিক পরিষদ (জিসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি নির্বাচিত হন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ও ত্যাগে মুগ্ধ হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একাধিকবার অনলাইন বৈঠকে তাঁর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন এবং প্রশংসা জানিয়েছেন।
রাজনীতির পাশাপাশি সমাজসেবা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও অসহায় মানুষের পাশে থেকে মানবিক কাজেও নিজেকে যুক্ত রেখেছেন এম এ হান্নান। তাঁর নেতৃত্বে নাসিরনগরে বিএনপি আবারও সংগঠিত ও শক্ত ভিত্তিতে দাঁড়িয়েছে।
তরুণ প্রজন্মের কাছে এম এ হান্নান এখন অনুপ্রেরণার নাম। বিএনপির নীতি, আদর্শ ও ত্যাগের রাজনীতিকে সামনে রেখে তিনি প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে জনসভা ও পথসভা করে পুরো নাসিরনগর উপজেলাজুড়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিশ্বাস, তারেক রহমানের এই মনোনয়ন তৃণমূলের প্রত্যাশার প্রতিফলন। তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস, এম এ হান্নানের নেতৃত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত হবে।
