অনলাইন ডেস্ক :
এক নাগাড়ে ৫৪৩ দিন বন্ধ থাকার পর ১২ই সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খুলছে। করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলেও শুরুতে সব শ্রেণীর ক্লাস হবে না। ধাপে ধাপে বিভিন্ন শ্রেণীর ক্লাস হবে। প্রথমে বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং আগামী বছরের পরীক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাস করবেন। বাকি শ্রেণীর ক্লাস শুরুতে একদিন করে হবে। পরে অবস্থা বুঝে ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে চলবে অনলাইন ও টেলিভিশন ক্লাস।
ইউনিসেফ, ইউনেস্কো একাধিকবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আহ্বান জানিয়েছিল। গত ২৪শে আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইউনিসেফ জানায়, কোভিড-১৯ এর কারণে বাংলাদেশে দীর্ঘতম সময় ধরে স্কুল-কলেজ বন্ধ থেকেছে। অভিভাবকরাও দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এতে আপত্তি জানিয়েছিল করোনা সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটি। তারা বলেছিল বাংলাদেশে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। এই অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে ঝুঁকিপূর্ণ। দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানো হয়। গত বছর ১৭ই মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবিলম্বে খোলার পক্ষে মত দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির এক সভা থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। বলা হয়, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী। এই অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার ব্যাপারে একাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেবে। শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি বলেছেন, একাডেমিক কাউন্সিল যদি ১২ই সেপ্টেম্বর থেকে খুলতে চায় তারা সে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী চাঁদপুরে তার নির্বাচনী এলাকায় এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশু-কিশোররা স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে আমাদের দেশে সংক্রমণের হার কম ছিল। এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। আগামী দিনে আরও কমবে। শিক্ষকদের একটি বড় অংশ টিকা নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও টিকা কার্যক্রম চলছে। এখন ১৮ বছর বয়সীদের টিকা দেয়া হচ্ছে। টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে ১২ বছর পর্যন্ত টিকা দেয়া হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা টিকায় অগ্রাধিকার পাবেন।
ওদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কত ভাগ শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন তা জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। এতে কতজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী টিকা নিতে নাম নিবন্ধন করেছেন। কতজন প্রথম ডোজ, কতজন দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন তা জানতে চাওয়া হয়। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিশু শ্রম বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে বাল্যবিবাহ। বহু শিক্ষক পেশা বদল করেছেন। আত্মহননের পথও বেছে নিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট লম্বা হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে।
সূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা।
অনলাইন প্রিন্ট ভার্সন
Copyright By Dowa Media Group Limited