অনলাইন ডেস্ক :
দিন যত যাচ্ছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ব্যাটারি চালিত মিশুক বিভাটেক রিক্সার ভাড়া অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েই চলেছে। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভৈরবে দ্রব্য মূল্যের তুলনায় যেভাবে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে মিশুক রিক্সার ভাড়া তাতে মধ্যবিত্তরা পড়ছেন বিপাকে।
৩/৪ মাস আগেও ভৈরব বাসস্ট্যান্ড থেকে ভৈরব বাজারে একজনের সিঙ্গেল মিশুক ভাড়া ছিল ১০ টাকা সেখান থেকে এখন কিছু কিছু মিশুক চালক সিঙ্গেল ভাড়ায় হাঁকায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ভৈরব বাজার থেকে চন্ডিবের ভাড়া ছিল ২০ টাকা এখন সেখানে কিছু কিছু মিশুক চালক ৫০ থেকে ৬০ টাকা হাঁকায়। এছাড়া ভৈরব বাজার থেকে লক্ষীপুর ভাড়া ছিল ৩০ টাকা এখন সেখানে কিছু কিছু মিশুক চালক ভাড়া হাঁকায় ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ভৈরব ফেরীঘাট থেকে জগন্নাথপুর ভাড়া ছিল ৩০ টাকা এখন সেখানে কিছু কিছু মিশুক চালক ৬০ টাকা হাঁকায়। মুসলিমের মোড় থেকে দূর্জয় মোড়ের ভাড়া ছিল ৫ টাকা সেখানে এখন কিছু মিশুক চালক ভাড়া হাঁকান ৩০ টাকা। আবার কারও কারও অভিযোগ কোন বৃষ্টিবাদল বা আবহাওয়ার তারতম্যের দিনে যেখানে ভাড়া ৩০টাকা বা ৪০ টাকা সেখানে কিছু কিছু মিশুক চালক ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত হাঁকায়! এতে হতবাক হওয়া ছাড়া যাত্রীদের আর কিছুই থাকে না।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, যেসব মিশুক চালকরা বহিরাগত তাদের অনেকেই এরকম অস্বাভাবিক হারে ভাড়া হাঁকাচ্ছে। এতে জিম্মি হয়ে পড়ছে ভৈরবের অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের যাত্রীরা। মূলত মৌসুমী মিশুক চালকরাই এমন অস্বাভাবিক ভাড়া বাড়ানোর জন্য দায়ী। তবে স্থানীয় মিশুকচালকদের অধিকাংশরা ভাড়া হাঁকানোর ক্ষেত্রে অনেকটা সংবেদনশীল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া বহিরাগত নেশায় আসক্ত কিছু মিশুক চালক ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত বলেও গুজব রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী বলেন, ‘ভৈরবে মিশুক ভাড়া অত্যাধিক বেড়েছে। যা মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। কিছু কিছু উলাবাদাইম্মা (বহিরাগত) মিশুক চালক ভৈরবে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। এরাই মূলত মিশুক ভাড়া অস্বাভাবিক হারে বাড়াচ্ছে। তাই ভৈরবে যদি মিশুক ভাড়ার একটি নির্দিষ্ট তালিকা করে দেয় তাহলে যাত্রীদের অনেক উপকার হতো’।
আরেকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যাত্রী বলেন, ‘ইদানিং ভৈরবের মিশুক ভাড়া অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে৷ মাঝে মাঝে কিছু মিশুক চালক যাত্রীদের নানান ভাবে ব্ল্যাকমেইল করে ভাড়া বেশি নেয়। দেখা গেল হাতে একটি ব্যাগ থাকলে এটার জন্য ভাড়া বাড়তি নেয়। আবার কোথাও ৩০ সেকেন্ডের জন্য থামলে সেটার জন্যও ভাড়া বেশি দাবি করে। এতে করে অনেক সময় মিশুক চালকদের সাথে যাত্রীদের প্রায়ই তর্কবিতর্ক হয়ে যায়’।
এই বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য পৌর মেয়র’সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ভৈরবের স্থানীয় জনমতে, ভৈরবের মিশুক ভাড়ায় একটি তালিকা ও নীতিমালা দরকার। কারণ এই মিশুকভাড়া ভৈরবের সাধারণ জনগণের একটি নিত্যদিনের হয়রানির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। অনেক মধ্যবিত্ত আছেন যারা লজ্জার ভয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে কিছু বলেন না। কিন্ত ভেতরে ভেতরে ঠিকই কষ্ট পান। এছাড়া যারা শারীরিক ভাবে অসুস্থ এবং মধ্যবিত্ত তারাও এই অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে বিপাকে পড়েন। তাই এই বিষয়ে ভৈরবের সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তারা যেন একটি নির্দিষ্ট সন্তোষজনক মিশুক ভাড়ার তালিকা ও নীতিমালা করে দেন এই প্রত্যাশা ভৈরবের মধ্যবিত্ত’সহ আপামর জনসাধারণের।