অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এবং উজানের পানির ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের ১৩টি বন্যা কবলিত জেলার বন্যা পরিস্থিতির শনিবার আরও অবনতি হয়েছে।
বন্যা উপদ্রুত জেলা গুলোতে পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা ঘাট ও ফসলের জমি এবং পানি-বন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থান এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান শনিবার সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন বন্যার পানি বাড়তে থাকলে স্থানীয় জনসাধারণকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন সরকার বন্যা কবলিতদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছে।
তবে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে অনেক বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে তৃণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশুরাও তীব্র খাদ্য সংকটে দিন কাটাচ্ছে। খবরে বলা হয়েছে বন্যার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন যার ফলে বিলীন হচ্ছে ফসলের জমি এবং সেই সাথে মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন অবকাঠামো।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র শনিবার জানিয়েছে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মা এবং এ সব নদ-নদীর শাখাপ্রশাখার পানি ২২ টি পয়েন্টে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এই সকল নদ নদীর অববাহিকায় অবস্থিত দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর মধ্যাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের অন্তত ১৩ টি জেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। কেন্দ্রের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বন্যা কবলিত জেলাগুলো হচ্ছে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরীয়তপুর।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আরিফুজ্জমান ভুঁইয়া ভয়েস অফ আমেরিকার এই প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এবং সীমান্তের ওপার থেকে ধেয়ে আসা পানির তোড়ে ধরলা, ঘাগট, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মা এবং এ সকল নদ-নদীর শাখা প্রশাখার পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা কবলিত জেলা সমূহের বন্যা পরিস্থিতি গত ২৪ ঘণ্টায় আরও অবনতি হয়েছে। তিনি বলেন যমুনা ও পদ্মা অববাহিকায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে যার ফলে দেশের মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। আরিফুজ্জমান ভুঁইয়া অবশ্য বলেছেন তাঁর কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে সীমান্তের ওপারে উজানে বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করেছে এবং বাংলাদেশেও যদি বৃষ্টিপাত কমে যায় তবে আগামী দুই একদিনের মধ্যে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হতে পারে।
এদিকে, আবহাওয়া দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে সেখানকার কর্তব্যরত কর্মকর্তা আব্দুর রহমান খান জানিয়েছেন শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে পটুয়াখালীতে যার পরিমাণ ৪৪ মিলিমিটার। তিনি বলেন আগামীকাল ঢাকায় বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে কিন্তু দেশের অন্যান্য এলাকায় বৃষ্টিপাত কমে যাবে।
তথ্যসূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা।