অনলাইন ডেস্ক :
ত্রিপুরার স্বনামধন্য যাত্রা অভিনেতা প্রয়াত মাখনলাল অধিকারীর স্মরণে ২০০০ সালে আগরতলা থেকে শিশির অধিকারী সম্পাদিত আলোর অপেরা নামক স্মারক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এর ভূমিকায় রমাপ্রসাদ দত্তের লেখা থেকে জানা যায় ত্রিপুরার যাত্রা জগতের নক্ষত্র মাখনলাল অধিকারীর যাত্রা শিল্পে কৃতিত্বের গৌরবগাঁথা। তার মতে ত্রিপুরার যাত্রা জগতের অর্ধশত বছর কালের একটি অনন্য নাম মাখনলাল। যাত্রা শিল্পের বিকাশে তিনি আগরতলা যাত্রা দল গঠন করেন যা পরবর্তী কালে বাগদেবী নাট্য অপেরা হিসেবে নামকরণ হয়। ত্রিপুরার বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় যাত্রা অভিনয় করেন। সাজনম অপেরার সাথেও ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করেছেন। যাত্রা শিল্পের সাথে জড়িত হীরালাল সরকার জানিয়েছেন মাখনলাল অধিকারী নিখিল ত্রিপুরা যাত্রা শিল্পী সংসদ,ত্রিপুরা যাত্রা শিল্পী সংঘেরও অন্যতম সদস্য ছিলেন। যাত্রাশিল্পে কৃতিত্বের জন্য পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মাননা। সুশীল ঘোষ জানিয়েছেন ১৯৯৭ সালে আগরতলা যাত্রা প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতার সম্মাণ অর্জন করেন একই বছর ত্রিপুরার স্বনামধন্য যাত্রা শিল্পী হিসেবে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তার অভিনীত যাত্রা পালার মধ্যে মহিষাসুর, মানুষ, রক্তরাগ,দানবীর হরিশ্চন্দ্র, গরীবের ভগবান,দেবতার গ্রাস,অরুন বরুন কিরণ মালা, ধনীর দুনিয়া, বাঁশের বাঁশি, বাগদী, ডাকাত,গঙ্গাপুত্র ভীস্ম, শিশমহল উল্লেখযোগ্য। প্রতিভাবান এই শিল্পী ১৯৯৮ সালের ১৮ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। ব্রিটিশ ভারতের তৎকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার কালীকচ্ছ এলাকার ধর্মতীর্থ গ্রামে ১৯৩১ সালে তার জন্ম। দেশ ভাগের পর পরিবারের সাথে ১৯৫৫ সালে ত্রিপুরার ইন্দ্র নগরে এসে বসতি গড়েন। উল্লেখ্য কৈশোরে কালীকচ্ছ এলাকায় তার যাত্রা শিল্পে হাতে খড়ি। কালিকচ্ছের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের কাছেও তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন।
লেখক : শেখ সিরাজুল ইসলাম,বাংলাদেশ।