
অনলাইন ডেস্ক :
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে বেশ মিল রয়েছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের। দু-জনই মুক্ত সাংবাদিকতা বিরোধী বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০২৩ সালের জরিপ বলছে, কিম জং উনের উত্তর কোরিয়া সাংবাদিকদের ওপর দমন পীড়নে পুরো দুনিয়ায় এক নম্বরে। তার পরেই রয়েছে চীন।
চলতি বছরে প্রকাশিত ইনডেক্সে অবশ্য উত্তর কোরিয়ার অবস্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৮০ নম্বরে থাকলেও চীন রয়েছে ১৭২-এ।
সদ্য প্রকাশিত হয়েছে মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘রিপোর্টার উইদাউট বর্ডারস’ বা আরএসএফের বার্ষিক প্রতিবেদন। বিশ্বে মুক্ত সাংবাদিকতার মান নিয়ে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে তাদের জরিপের ফলাফল।
সেই জরিপের হাত ধরে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী ১৮০টি দেশের মধ্যে চীনের অবস্থান ১৭২। গত বছর ছিল ১৭৯। প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে চীনের সঙ্গেই উচ্চারিত হচ্ছে উত্তর কোরিয়া ছাড়াও সিরিয়া, আফগানিস্তান, ভিয়েতনাম, ইরান প্রভৃতি দেশেরও নাম। তবে আয়তন বা লোকসংখ্যায় চীনের ধারেকাছে কেউ নেই।
আরএসএফের মতে, চীনে সাংবাদিকদের ন্যূনতম স্বাধীনতাটুকুও নেই।
ফ্রান্সে সংস্থাটির সদর দপ্তর থেকে প্রকাশিত স্বাধীন গণমাধ্যমের সূচকে প্রতিফলিত হয়েছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সত্যকে লুকিয়ে রাখার মরিয়া প্রচেষ্টার কথা। তথ্য জানার কোনও উপায় সেখানে নেই।
বিচার বহির্ভুতভাবে বছরের পর বছর জেলে আটকে রেখে সংবাদিকদের ওপর অত্যাচারের খবর প্রায়শই মিলছে।
শি-র সাম্প্রতিক ইউরোপ সফরকালে ফ্রান্সে বিক্ষোভ দেখান মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী সাংবাদিকরা। তাদের অভিযোগ, ১১৮ জন সাংবাদিককে আটক করে রেখেছে চীন। এছাড়া চীনে উইঘুর মুসলিমদের ওপর গণহত্যার অভিযোগ চীনের বিরুদ্ধে।
চীনে কর্মরত বিদেশি সাংবাদিকদের সংগঠন ফরেন করসপন্ডেন্টস ক্লাব অফ চায়না বা এফসিসিসি-র মতে, শি-র আমলে চীনে কাজ করতে গিয়ে ‘অভূতপূর্ব বাধা’ পেতে হচ্ছে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের। এমনকী, আন্তর্জাতিক খেলাধূলা বা শীতকালীন অলিম্পিক কভার করতে গেলেও সাংবাদিকদের আসল খবর প্রকাশ করার স্বাধীনতা নেই।
এফসিসিসির মতে, ‘চীন সাংবাদিকদের জন্য দুনিয়ার সবচেয়ে বড় জেলখানা’। এফসিসিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চীনে সাংবাদিকদের শারীরিক লাঞ্ছনা, হ্যাকিং ও অনলাইন হয়রানি শিকার হতে হয় প্রতিনিয়ত। বিদেশি সাংবাদিকরা ভিসা পাচ্ছেন না।
এফসিসিসির বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, চীন ও হংকংয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরাও নিশানার শিকার হচ্ছেন।
এফসিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিদেশি সাংবাদিকরা রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্যাতন ও হয়রানির কারণে চীন ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তবে বেইজিং এফসিসিকে ‘অবৈধ সংগঠন’ বলে অভিহিত করেছে।
এরই প্রেক্ষিতে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে শি-র প্যারিস সফরের সময় আরএসএফ বিক্ষোভ দেখায়। সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক, থিবাউট ব্রুটিন দাবি জানিয়েছেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সেন্সরশিপ এবং দমন অভিযান চীনকে বন্ধ করতে হবে’। তার অভিযোগ, শতাধিক সাংবাদিককে বন্দী করে রেখেছে চীন।